মৃৎ শিল্পঃ মৃৎ শিল্পের মধ্যে মাটির তৈরি বিভিন্ন পুতুল, দেবদেবীর মুর্তি, গার্হস্থ্য দ্রব্যাদি, মাটির ভাস্কর্য, টালি, শখের হাঁড়ি, মনশাঘট ও ফুলদানি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য মৃৎ শিল্প পল্লী কুমিল্লার বিজয়পুর, পটুয়াখালীর মদনপুরা, ফেনীর চম্পকনগর, শরিয়তপুরের কার্ত্তিকপুর এবং ঢাকার রায়ের বাজারে অবস্থিত।
বস্ত্র শিল্পঃ দেশীয় বস্ত্র শিল্পের মধ্যে রয়েছে শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, গামছা, মশারি, তোয়ালে, ইত্যাদি। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- উপজাতীয় বস্ত্র, মসলিন, জামদানী, মলমল টরোয়ো শাড়ি, পাবনার শাড়ি, টাঙ্গাইলের শাড়ি, কাতান, রেশমবস্ত্র, খদ্দর বস্ত্র ইত্যাদি।
পাটজাত শিল্পঃ পাট দিয়ে বিভিন্ন মোটিভের সিকা, টেবিলম্যাট, শতরঞ্জি, কার্পেট, সৌখিন হ্যান্ডব্যাগ, থলে ইত্যাদি তৈরি করা হয়। এসব পণ্য পাটজাত পণ্য হিসেবে পরিচিত।
বাঁশ-বেত শিল্পঃ বাংলাদেশের বাঁশ ও বেত শিল্পের মাধ্যমে সাধারণত বাঁশ বেত সামগ্রী, বেড়া, চাটাই, মাছধরার ফাঁদ, হাতপাখা, মোড়া, সোফাসেট, টেবিলম্যাট, ওয়ালম্যাট, ট্রে, ফুলদানি, ছাইদানি ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
শীতলপাটিঃ শীতলপাটি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি কারু শিল্প। মুলত এটি এক ধরণের চাটাই যেখানে আবহমান গ্রাম বাংলার প্রকৃতি, রূপ এবং সৌন্দর্যকে কারুকাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়।
গহনা শিল্পঃ বাংলাদেশের নারীদের অন্যতম পছন্দ হাতে তৈরি বিভিন্ন গহনা সামগ্রী। এসবের মধ্যে রয়েছে সিঁথিতে ঝাপা, কানে কানপাশা, হীরাম মুল কুড়ি, ঝুমকা, নবরত্ন ও চক্রবালি, নাকে বেশর নথ, ফুরফুরি, গলায় পুষ্পহার, সীতাহার, সাতনরীহার, চম্পাকলি, মোহনমালা, হাতে তাগা, মাদুলি বাজার মান্তাশা, রত্নচূড়, আঙ্গুলে আঙ্গুষ্ঠার শাহনামী, অ্যানওয়ান, কোমরে বিছা, চন্দ্রহার কিন্ধিনী পায়ে, ঝাঝুরা পায়েল, তোড়া ইত্যাদি।
কাঁসা-পিতলজাত শিল্পঃ ঢাকার ধামরাই, সাভার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জামালপুরের ইসলামপুর, রংপুর, টাঙ্গাইল ও শরিয়তপুরে পারিবারিক শিল্প হিসেবে বংশ পরম্পরায় কাঁসা ও পিতলের বিভিন্ন দৈনন্দিন ব্যবহার সামগ্রী তৈরি হয়ে আসছে।
নকশী কাঁথাঃ প্রাচীনকাল থেকে এদেশে বিভিন্ন ধরণের নকশী কাঁথা তৈরি হয়ে আসছে, যা এখন লাভজনক শিল্পে পরিণত হয়েছে। মুলত তিন ধরনের নকশি কাঁথা এদেশে তৈরি হয়: চিত্রিত কাঁথা, মাটিকাঁথা ও পাইড় কাঁথা।